বাংলাদেশে খাদ্য ও পল্লী উন্নয়নে কৃষিনীতির প্রভাব বিশ্লেষণ : হাওড় অঞ্চল (জলাশয়) ব্যবস্থাপনা কৌশল (Analysis of Agriculture Policy on Food System and Rural Development in Bangladesh) প্রেক্ষিত শীর্ষক এক গবেষণা তরী ভাসছেহাকালুকি হাওরে। দেশের ৭ টি হাওর জেলা সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা ওকিশোরগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা সমৃদ্ধ এ তরী ঘুরবে হাওর তীরের মানুষগুলোর জীবনমান উন্নয়নে করণীয়কৌশলগুলো নির্ধারণ করতে। 

প্রফেসর ড. ফকির আজমল হুদার নেতৃত্বে এক দল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এই মহাকর্মযজ্ঞ পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ কৃষিগবেষণা কাউন্সিলের সমন্বয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এই গবেষণা কর্মপরিচালনা করছে। মার্জিন অব নলেজ (Merging of Knowledge MoK) বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে চলছে কৃষিনীতিগুলোরমূল্যায়ন এবং ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা। একই সঙ্গে সরকারের প্রান্তিক পর্যায়ে নেয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সঠিক প্রয়োগ হচ্ছেকিনা তারও যাচাই-বাছাই চলছে। বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের হাওরভিত্তিক টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিভিন্ন সমস্যাচিহ্নিতকরণ এবং সমস্যা উত্তরণে স্থানীয় জনগণের দেয়া পরামর্শ নিচ্ছে এই গবেষক দল। 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও এই কর্মযজ্ঞের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. ফকিরআজমল হুদা জানান,   “বর্তমানে হাওরের যে কৃষি উন্নয়ন হয়েছে সেই কৃষি উন্নয়ন এবং সরকারি কৃষিভিত্তিক উন্নয়নের প্রভাবআমরা মূল্যায়ন করছি। প্রান্তিক স্থরের লোকজনকে সম্পৃক্ত করে তাদের মতামত নিয়ে আমরা বিগত কৃষি নীতিগুলোরপর্যালোচনা করছি। কৃষিনীতি কেমন হওয়া উচিত এবং ভবিষ্যতে হাওরভিত্তিক গ্রাম উন্নয়নে নীতিনির্ধারকরা যাতে টেকসইকল্যাণকর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সেই তথ্য উপাত্ত আমরা সংগ্রহ করছি। আমরা একটা ভাসমান গবেষণা তরী নিয়ে গ্রামে গ্রামেযাচ্ছি।”

প্রফেসর ড. ফকির আজমল হুদা আরও জানান, বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চাইছিজনকল্যাণমূখী একটি কৃষিনীতি চালু হোক। এই নীতিতে উপকৃত হবে কৃষক এবং দেশ। তাই কৃষকের অতি নিকটে এসে তাদেরজীবন-জীবিকা সম্পর্কে জানতে পারছেন তরুণ গবেষকগণ। এই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সরকারকে একটি কার্যকরীকর্মপরিকল্পনা দিতে সক্ষম হবো বলে আশারাখি। 

এ গবেষণা কর্মের সঙ্গে যুক্ত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি পলিসি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জসিম উদ্দিনআহমেদ জানান, “এটা একটা সরকারি প্রকল্প। মূলত সরকার যে কৃষিনীতি প্রণয়ন করে থাকে জনগণের কল্যাণে, সেটার সঠিকপ্রয়োগ হচ্ছে কিনা এ কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে আমরা জানার চেষ্টা করছি। যারা হাওর কেন্দ্রিক জীবিকা নির্বাহ করে তাদের সাথেআমরা সরাসরি কথা বলছি এবং বিগত ১০ বছরে কী উন্নয়ন হয়েছে সেটা মাঠ পর্যায়ে দেখছি। প্রান্তিক পর্যায়ে জনগণের নিকটসরকারের দেয়া প্রকল্পের সুফল আদৌ জনগণ পাচ্ছে কিনা আমরা সেটা মূল্যায়ন করছি। কী ধরণের নীতি হলে আমাদের কৃষকউপকৃত হবে সেটা জানার চেষ্টা করছি হাওর তীরবর্তী লোকজনের নিকট হতে। আমাদের এই কর্মযজ্ঞ শেষে কৃষির সাথে সংশ্লিষ্টসবাইকে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি ওয়ার্কসপ করবো। আশা করছি সুপরিকল্পিত কিছু নীতিমালা আমরা সরকারকে দিতেপারবো এবং যেটার আলোকে সরকার পরবর্তী কৃষিভিত্তিক উন্নয়নে বড় ধরণের ভূমিকা রাখতে পারবে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here