
নতুন যে অভিবাসন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে তাতে সিটিজেনশিপ পাওয়ার প্রক্রিয়া টা অনেকটা কঠিন পর্যায়ে চলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যারা এখনো আবেদন করেননি ডিসেম্বর ২০২০ এর মধ্যেই আবেদন প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে ফেলেন।
এখন নতুন নিয়মে আপনাকে ২০টি প্রশ্ন করা হবে। তার মধ্যে আপনাকে অবশ্যই ১২টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হবে। তাহলে আপনি পাস করতে পারবেন। আগে যেমন দশটার ভিতরে ছয়টা পারলেই পাস বলা হতো। এখন সেটা হবে না। নতুন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
আবেদন করার সময় যাতে করে কোনো ভুল না হয় সেজন্য আপনারা একজন দক্ষ অ্যাটর্নির সহযোগিতা নিতে পারেন। এমনকি আপনারা ইন্টারভিউ এর সময় একজন দক্ষ অ্যাটর্নি সাথে নিতে পারবেন।
যারা ফ্যামিলি পিটিশনের জন্য আবেদন করবেন। সেটা Fill Up করার জন্য কিন্তু বেশ প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। এখানে যদি আপনারা সঠিক তথ্য না দেন. সে ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। ইন্টারভিউয়ের সময় আপনাদের কাছ থেকে ফ্যামিলির সদস্যদের বিষয়ে অনেক রকম প্রশ্ন করে এবং সেগুলোর তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক উত্তর দিতে হয়. সেজন্য যারা দক্ষ ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি আছেন তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আবেদন করলে সব থেকে ভালো হয় ।
যারা গ্রিন কার্ড হোল্ডার আছেন এবং ১৫ বছর যাবত আমেরিকাতে বসবাস করছেন এবং যাদের বয়স যদি ৫৫ বছর । তাদের জন্য একটা পরীক্ষা আছে । যেখানে ২৫টার কার মত প্রশ্ন থাকে এবং মোটামুটি ১০ টির উত্তর করতে পারে (চাইলে সাথে একজন দক্ষ অ্যাটর্নি নিয়ে যেতে পারে) । তখন আমেরিকার সিটিজেনশিপ পেয়ে যাবে ।
তাছাড়া যিনি ৬৫ বছর বয়স এবং ১০ বছর ধরে আমেরিকাতে বসবাস করছেন এবং গ্রিন কার্ড হোল্ডার । তাদের জন্যও ২৫টি প্রশ্ন এখান থেকে যদি কিছু প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে উত্তর করতে পারেন তাহলে তাদের সিটিজেনশীপ প্রাপ্তির সম্ভাবনা বেশ ভালো ।
যারা ৪০ বছরের উর্ধ্বে বয়স এবং শারীরিক কোনো সমস্যা আছে বা মেডিকেল কন্ডিশন ইজ নট গুড এবং তারা যদি ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত হন তখন যদি পরীক্ষক সবকিছু বিবেচনা করেন । তাহলে সহজেই তিনি গ্রীন কার্ড পেয়ে যাবেন এবং নাগরিকত্ব বা সিটিজেনশিপ পাওয়াটা অনেক সহজ হবে ।
সিটিজেনশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স কোনো বিষয় নয় । যেকোনো রিজনাবল বয়স এ আপনারা সিটিজেনশিপ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং ইন্টারভিউ দিতে পারবেন এমনকি কেউ যদি phisical disabilities হন তাহলে যথাযথ কাগজপত্রসহ সিটিজেনশিপ এর জন্য আবেদন করতে পারবেন । পরীক্ষার সময় তারা যথেষ্ট ছাড় পাবেন । ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাদেরকে সদয় দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সিটিজেনশিপ পেতে সুবিধা হবে ।
প্রশ্ন:আমি আমার ভাইয়ের সিটিজেনশিপের জন্য ২০১২ সালে আবেদন করেছি । তার সকল সার্টিফিকেটে নামের বানান Mohammad । কিন্তু আমি আবেদনপত্রে MD লিখেছি । এক্ষেত্রে সিটিজেনশিপ পেতে কি কোন অসুবিধা হবে?
উত্তর: এক্ষেত্রে আপনাকে প্রমান সহ সকল কাগজপত্র পাঠাতে হবে । আশাকরি আপনার এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না । তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন ।
প্রশ্ন: আমি ২০১৫ সালের May মাসে গ্রীন কার্ড পায় । আমার চাকরি E-26 এর মাধ্যমে । কিন্তু পরবর্তীতে আমি অসুস্থতার কারণে ওই কোম্পানিতে কাজ চলমান রাখতে পারেনি । ২০১৬ সালের May মাসে আমি অন্য কোম্পানিতে কাজ শুরু করি এবং আমি আমার ট্যাক্স ফাইলিং এই কোম্পানি থেকে শুরু করি । আমি সিটিজেনশীপ এর জন্য ২০২১ সালের মে মাসে আবেদন করি । এক্ষেত্রে কি আমার কোন অসুবিধা হবে ?
উত্তর: এজন্য সব থেকে ভাল হয় আপনি একজন সার্টিফাইড অ্যাটর্নি এর পরামর্শ নিন । আশা করি তিনি আপনাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারবেন ।
প্রশ্ন: আমার মায়ের সিটিজেনশিপের জন্য আবেদন করেছি । আমি কি আবেদনপত্রে ইন্টারপ্রেটার হিসেবে আমার নাম দিতে পারি?
উত্তর: আবেদনকারীর বিশেষ কোন অসুবিধা না থাকলে ইন্টারপ্রেটার নেওয়া যাবে না । এ ধরনের কোনো সুযোগ নাই । সবকিছু আবেদনকারীকে নিজে থেকেই করতে হবে ।
প্রশ্ন: আমি নিজে একজন গ্রীন কার্ড হোল্ডার এবং আমি আমার স্বামীর জন্য ১৫ মাস আগে আবেদন করেছিলাম । এখনো রিসিভ লেটার আসছে কিন্তু অ্যাপ্রভাল (Approval) আসে নাই ।কোনো আপডেট পাইনি । কোনো সমস্যা হলো কিনা জানাবেন ।
উত্তর: আপনার আবেদনপত্রটি এতদিনে প্রক্রিয়াধীন হয়ে যাওয়ার কথা ।তবে এক্ষেত্রে আপনি একজন দক্ষ অ্যাটর্নির সাথে পরামর্শ করলে আপনার আবেদন প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত হবে ।
প্রশ্ন: আমার গ্রীন কার্ড হোল্ডার ভাই পাঁচ বছর আমেরিকাতে এসেছে এবং ওনার কিছু মানসিক সমস্যা আছে । উনার স্ত্রী বাংলাদেশ আছে । এখন যদি আমরা ওনার হোম কেয়ার বেনিফিটের জন্য আবেদন করি তাহলে কি তিনি ওনার স্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় আনতে পারবেন?
উত্তর: এটি সম্পূর্ণভাবে কেস (Case) এর উপর নির্ভর করবে । এজন্য একজন ভালো অ্যাটর্নি এর সাথে যোগাযোগ করলে ভালো হয় ।
প্রশ্ন: আমি বাংলাদেশ ভৈরব বাজার থেকে তপন বলছি । আমার বড় ভাই আমেরিকাতে থাকে । তিনি আমার পরিবারের জন্য সিটিজেনশীপ আবেদন করেছে । আমাদের ২০২০ সালের মার্চের ২৪ তারিখে ঢাকা আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট ছিল । কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে মার্চ ১৯ তারিখেই লকডাউন শুরু হয়ে যায় । তখন ট্রাম্প প্রশাসন দুই মাসের জন্য এইসব প্রক্রিয়াকেই স্থগিত করেছিল । পরে নাকি আবার ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ।এখন এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি?
উত্তর: আপনাকে এক্ষেত্রে অপেক্ষা করতে হবে । ৩১ ডিসেম্বরের পর সবকিছু চালু হয়ে যাবে । আপনার যদি অ্যাটর্নি থাকে তাহলে উনি আপনাকে ফলোআপ করবেন যাতে আপনারা দ্রুত ইন্টারভিউয়ের জন্য এম্বাসি ফেস করতে পারেন ।এখন আপনাকে সবসময় আপটুডেট থাকাটাই সমীচীন হবে ।
প্রশ্ন: ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আমার বিবাহিত সন্তানের জন্য আবেদন করেছিলাম । আমি রিসিভ লেটার পেয়েছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো অ্যাপ্রভাল (Approval) পায়নি । এজন্য আমার কি করনীয়?
উত্তর: এটি প্রক্রিয়াধীন আছে । আপনাকে ফলো আপ করতে হবে । দ্রুত হয়ে যাওয়ার কথা ।আপনি একজন অ্যাটর্নির মাধ্যমে খোঁজখবর নিতে পারেন ।
প্রশ্ন: আমি এবং আমার স্ত্রী আমেরিকার সিটিজেন আমাদের সন্তান ১২ বছর বয়স এবং তারও আমেরিকান পাসপোর্ট ও গ্রীন কার্ড আছে ।আমাকে কি তার সিটিজেনশিপ এর জন্য আবেদন করতে হবে?
উত্তর: যদি পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে আপনি আবেদন করতে পারেন ।আশা করি তার জন্য সিটিজেনশিপ পেতে আপনার সহজ হবে ।
আরো তথ্য ক্রিমিনাল কেস এবং ইমিগ্রেশন এর দুটি ভিন্ন দুটো বিষয় । এই দুটো ক্ষেত্রেই আপনাকে খুব দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে হবে । যারা এই সকল বিষয়ের সাথে যুক্ত আছেন তারা অবশ্যই সতর্ক থাকবেন এবং একজন সার্টিফাইড দক্ষ এটর্নি এর সাথে যোগাযোগ করবেন । ধন্যবাদ ।
